বহন করা ইতিহাস-নাজমুল হোসেন এর কবিতা

বেলকনির উদরস্থ কপোত তড়িৎ

প্রস্থানে উড়ে গেলেই,

গুলির শব্দ!

ঝাঁঝাল শরৎ সন্ধ্যা,

বিপরীতে ঝুলিয়ে রাখা মানুষের

বারবিকিউ,

ঠাওর কর নীহারিকা আমাদের

চোখগুলো কাটা চামচ হয়ে যাচ্ছে

বেমালুম ।

ঠাওর কর আমরা ঠিক বিপরীতে

বসে গিলে খাচ্ছি পরস্পরের দিগন্ত

রেখার প্রান্ত বিন্দু ।আর আমাদের

নাভিগোলকের ঠিক উপরেই ওরা

টেনে দিচ্ছে তারকাঁটা।

নিরেট আঁধারের বিপরীতে রুটির

মতো আধপোড়া বাবার মুখ অথবা

সংশয় আমদের বোধ গুলোকে করে

তুলছে ভাতের প্লেট।

আইলহীন চরে জেগে উঠছে প্রথম

বিপ্লব অথবা চর

দখলের রক্তে মাটি উর্বর থেকে হয়ে

উঠছে আরো উর্বরতর।

সহসা সাস্থবতী ষোড়শীর উদাম বক্ষের

মতো ফেপে উঠেছে আউসের ধান

ক্ষেত।

মই বিছিয়ে নীহারিকার বুকের

অলিন্দে উঠে আসা বসন্তে অথবা

মিছিলে এভাবেই নেমে আসে রাষ্ট্রীয়

সন্ত্রাস।

আজীবন বহন করা কোষেদের বিদ্রহ

অথবা আঁচিল।

লাঠি, সুরকি, বল্লাম, নানীর স্বপ্নের

সাদা ঘোড়া,২৭ তম জনমের স্মৃতির

প্রাসাদে আচমকা খসে পরা

একখানা লাল ইট।

নূপুরের শব্দ!

বয়সী বয়ানের শীতনিদ্রা,

শ্রেণিহীন মানুষের হঠাৎ ফুঁসে ওঠা

বারান্দা অথবা দোলনা

পাউরুটি বিনিয়ে শপথ করিয়ে

নেওয়া শ্রেণী শত্রুর ঘাতক অথবা

বিপ্লবী

আমার কপালে পরিয়ে দাও,হে

মহাকাল স্বজন

ঘাতকের রাজটিকা, আমার

ভেতরের কুটুম পাখিরা সংশয়বাদী

হয়ে উঠেছে।অথচ কি নিদারুণ

ব্যাথায় এই ঘাতক পাখিরা, সারা

দিন রোদনধারায় ভিজিয়ে রাখে

রোজকারের বারান্দা।

ইশতেহার-নাজমুল হোসেন নয়ন এর কবিতা

নবায়ন যোগ্য ইশতেহারে ক্ষুধা হলো

একমাত্র আলাপের উঠান।

হে নবজাতকেরা,

হে আমার,

কোষ থেকে বিভাজিত

অনুক্রোষ,এই মহাকাল তোমাদেরও

বসতে দিবে ক্ষুধার শীতল পাটিতে।৷

যেমন তোমার,

আমার,

পূর্বসুরীরা এখনো ভাতের প্লেট হয়ে

বসে আছে দক্ষিণের বারান্দায়।

কল পারে দাঁড়াতেই,

দেয়ালের ওপারের স্লোগান শুনে

হাত থেকে খসে পরে আধোয়া প্লেট।

পৃথিবী সমান ভূখণ্ড নিয়ে জেগে উঠি

আমি,

তোমরা,

আমাদের বোধ,

আমাদের নাভির উপর দিয়েই ওরা

টেনে দেয় কাঁটাতার।

টাকি শুটকির মত ঝুলে যায়

ফেলানী,

একটি শঙ্খ চিল

এক মুঠো বাতাস।

পাখিটির জানাই হয় না

কল্লোলিনী কলকাতার আকাশে

বাতাসে

ফ্যান দাও, ফ্যান দাও করে

জেগে উঠেছে এক মিলিত মানুষের

বিপ্লব।

অথচ এর আগের বছরই

স্বাস্হোজ্জ্বল যুবতী মেয়ের লাবণ্যের

মতো

গোলা ভরা ধানে ভরে উঠেছিলো

আমার প্রমাতামহীর ষোড়শ বয়স।

নিদারুণ বিষ্ময় নিয়ে আবার জেগে

উঠিছে

আমি

মহিষের নৈশব্দ চোখের মতো

সর্বহারাদের

স্লোগানে।

আমার,

সাতাশি জনমের সবটুকু ছায়া নিয়ে
দাঁড়িয়ে

গেছি তোদের উনুনের উপর,

ফুঁৎকারে সবটুকু আগুন গিলে

খাওয়ার

সাতাইশ,

জনমের সব টুকু বোধ নিয়ে আমি

এখন পুড়ে ছাই,

আমি পুড়ে মরেছি ঠিকই

তবে আমার জুতায় আমার নাম

লেখে ছুড়ে মেরেছি

তোদের সংসদ ভবনে সুউচ্চ চুড়ায়।

নব দৃষ্টি নিয়ে ক্রমস নীল থেকে

আরো নীল হওয়া আকাশের দিকে

অস্থির থেকে আরো অস্থির হয়ে

আমি ঠিক

পৌঁছে যাবো পৃথিবীতে থাকা আমার

একান্ত গ্রামে।

ষোড়শী গ্রাম

আমার,

আমাদের

সবার, শেষ অশ্রু টুকু ফেলতে তার

নাভিকমলে ফুটিয়ে

রেখেছে সাতাইশটি কলমি ফুল।

কোলাজ ২৭- নাজমুল হোসেন নয়ন এর কবিতা

বেজোড় সংখ্যায় ভীষণ রকম স্থিতি

নিয়ে স্বপ্নের তৃতীয় স্তরে জেগে উঠি

পৃথিবীর নির্জনতম গ্রামে।

গুটিবসন্তের মতো আমার একান্ত

গ্রামের শরীরে জেগে ওঠে ইব্রাহিমের

জোয়ার উঠান।

 

আমি ভিষণ তোরে সলতে উষ্কে

দিলে পুড়ে যায় পিতামহীর দক্ষিণ

হস্ত । আমার বুকের ঠিক

মাঝখানটায় লুকিয় যায় শীতল

বাষ্পের ইছামতী। মাছেরা মিছিল

নিয়ে এগিয়ে যায় বাতাবি লেবুর

বাগান ঘেঁষে, গ্রামের সবচেয়ে উচ্চ

জমিনে।যেখানে বৃষ্টি জলের স্থিতি

নেই বলে গজিয়ে উঠেনি এখনো

বুনোঘাস।

 

আমাদের ধরে ফেলে মন্ডল বাড়ির লাঠিয়ালেরা।

ওদের লাঠি থেকে আমাদের দূরত্ব

দুই হাত। তবে আমাদের রক্তের দূরত্ব

খুব জোড় দুই মিলিমিটার।

ঝুলিয়ে দেওয়া হোক আমাকে

মায়ের উদরস্থ ত্রি রংয়ের দড়িতে।

সাতাইশ হাত ঘরে সাড়ে পাঁচ হাতের

জায়নামাজ। তার উপর বসে আছেন

মাতা, উদরের দৈর্ঘ্য প্রস্থ নিয়ে নিয়ে।

আপাতত যে ধর্ম সংকটে আমরা,

স্থান খুঁজছি মায়ের উদরে পুনরায়।

আকাশে মেঘ সুখে দুখে যাতেই

ডাকুক না কেন।পাখিরা যেমন

গাছের পাজর সেলাই করে নেয়

নিজের আবরণ।তেমন করে আমরা

মিশে যাই

 

ছাতিমের পাতায়,

ফুলে,

ফুলের গন্ধে।

ছাতিম তলার আঘাত গুলো ঠিক

মনে নাই আমার।ছাতিমের গন্ধে

মাতাল হয়ে আমি ওজন শূন্য

হয়েছিলাম ক্ষণকাল।

কাঁটাতার কি আমার নিশ্বাসের ওজন

কেও তার ব্যাসার্ধের পেটে হজম

করে নেবে

হে মহাকাল???

জানেন দাদা –

স্বপ্নের বেজোড় তম প্রথম স্তরে কি

নিদারুণ অসারতার আঁধার নিয়ে

এখানে সন্ধ্যা নামে। সলতের

উষ্কানিতে এতো এতো আঁধারের

প্রলুবদ্ধ আহ্বান যে , মাছের পেটের

মতোই উজ্জ্বল ঠাহর হয় জননীর

মুখ।